জমির মালিকানা বের করার উপায় ও খতিয়ান বের করার নিয়ম - eporcha - anyupay.com

জমির মালিকানা বের করার উপায় ও খতিয়ান বের করার নিয়ম - eporcha

আপনি কি আপনার জমির মালিকানার তথ্য বের করতে চান? তাহলে জমির মালিকানা বের করার উপায় ও খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

জমির ক্রয়-বিক্রয়, রেকর্ড অনুসন্ধান, জমির রেকর্ড সংশোধন, জমির পরিমাণ, সীমানা ইত্যাদির জন্য জমির মালিকানা বের করা প্রয়োজন। তাহলে কিভাবে জমির মালিকানা বের করবেন, জমির সার্টিফিকেট বা পার্সেল কি? কিভাবে অনলাইনে জমির মালিকানা বের করা যায় এবং কিভাবে একটি সার্টিফাইড কপি পাওয়া যায় তা নিয়েই আজকের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

জমির মালিকানা বের করার উপায় ও খতিয়ান বের করার নিয়ম - eporcha

কিভাবে জমির মালিকানা বের করবেন

জমির মালিকানা অনলাইনে দেখতে www.eporcha.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। তারপর দাগ নম্বর/খতিয়ান নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করলে জমির মালিকানার সমস্ত তথ্য দেখা যাবে এবং অনলাইনে আবেদন করে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পাবেন।

জমির মালিকানা সম্পর্কে জানতে খতিয়ান বা পর্চা তথ্য প্রয়োজন। এতে জমির মালিকের তথ্য এবং জমি সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য রয়েছে।

জমির মালিকানা জানতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ/উপজেলা ভূমি অফিস সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে দাগ নম্বর অনুযায়ী জমির মালিক সম্পর্কে জানতে পারবেন অথবা আপনি সরকারি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে জমির মালিকানা জানতে পারেন।

জমির মালিকানা জানার উপায় অনুযায়ী প্রথমে কিছু তথ্য জানতে হবে:
  • জমির অবস্থান অনুযায়ী বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা।
  • নির্দিষ্ট জমির দাগ নম্বর/খতিয়ান নম্বর।
  • কি ধরনের খতিয়ান প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা (বি এস, সি এস, বি আর এস নাকি আর এস)।
  • একটি প্রত্যয়িত কপি সংগ্রহ করতে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিবরণ এবং মোবাইল নম্বর।

জমির খতিয়ান বা পর্চা কী

খতিয়ান বা পর্চা হল জমির মালিকানা প্রমাণকারী একটি সরকারি দলিল। সরকারিভাবে সমস্ত জমি জরিপ করার মাধ্যমে জমির মালিকানা এবং প্লটের বিবরণ সহ বাংলাদেশ ফর্ম নং 5462 (সংশোধিত) এ একটি নথিচিত্র প্রকাশ করে এটিই মূলত খতিয়ান। খতিয়ান বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন- পর্চা।

অনলাইনে জমির মালিকানা বের করার নিয়ম

অনলাইনে জমির মালিকানা বের করতে, এই লিঙ্কে যান, জমির মালিকানা অনুসন্ধান – এখন একটি তথ্য অনুসন্ধান ফর্ম আপনার সামনে উপস্থিত হবে। তারপর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-

খতিয়ান তথ্য পূরণ করুন

আবেদনপত্রে আপনার বিভাগ এবং জেলা ক্রমানুসারে নির্বাচন করুন। এখন, আপনি যে ধরনের খতিয়ানের তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তা নির্বাচন করুন। যেমন (নামজারি- যেকোনো একটি, বি এস, সি এস, বি আর এস, আর এস, এস এ, পেটি, দিয়ারা)।

জমির মালিকানা বের করার উপায়


নিচে আপনার উপজেলা ও মৌজা নির্বাচন করুন। এখন খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য-
  • খতিয়ান নং
  • দাগ নং
  • মালিকানা নং
  • পিতা/স্বামীর নাম
এই অপশনগুলি থেকে আপনার আপনার কাছে যেটি রয়েছে তা নির্বাচন করুন এবং এটি পূরণ করুন। উপরের তথ্যের মাধ্যমে আপনি জমির প্রকৃত মালিকানা দেখতে পারবেন। নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারেন।

অনুসন্ধান করুন

অবশেষে, আপনি একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পাবেন। এর পাশের ফাঁকা জায়গায় ক্যাপচা পূরণ করুন এবং "অনুসন্ধান" এ ক্লিক করুন। আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হলে, আপনি পরবর্তী পৃষ্ঠায় সেই খতিয়ানে জমির মালিকানার তথ্য দেখতে পাবেন।

জমির মালিকানা তথ্য নমুনা

জমির খতিয়ানের তথ্যে আপনি নীচের ছবিতে দেখানো মালিকানার বিবরণ দেখতে পাবেন।

জমির মালিকানা যাচাই

একবার জমির মালিকানা পদ্ধতি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, আপনি তথ্য পৃষ্ঠায় 'আবেদন করুন' টেক্সটে ক্লিক করে জমির খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।

খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন

'আবেদন করুন'-এ ক্লিক করুন এবং জমির খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির পেতে নীচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:

ধাপ-1: আবেদনকারীর তথ্য পূরণ

খতিয়ানের আবেদনপত্রে খতিয়ান নম্বর, উপজেলা ও মৌজা উল্লেখ থাকবে। তারপর, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, ইংরেজিতে পুরো নাম এবং ঠিকানার তথ্য লিখুন। ঠিকানা তথ্য পোস্টাল যোগাযোগ তথ্য প্রদান করুন।

খতিয়ানের আবেদন ফরম


ধাপ-২: মোবাইল নম্বর যাচাই করুন

মোবাইল নম্বরের পাশে 'যাচাই করুন' লেখাটিতে ক্লিক করে মোবাইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনার দেওয়া নম্বরে একটি যাচাইকরণ কোড পাঠানো হবে, এটি এখানে লিখুন।

একটি মোবাইল নম্বর মাসে সর্বোচ্চ 1 বার যাচাই করা যায়।

ধাপ-3: আবেদনের তথ্য

এই ধাপে, অ্যাপ্লিকেশান টাইপ-এ 'সার্টিফাইড কপি' নির্বাচন করুন। এখন ডেলিভারি পদ্ধতি এবং ডেলিভারির স্থান নির্বাচন করুন।

খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন


এখন পেমেন্ট অপশনটি নির্বাচন করুন এবং নীচের ক্যাপচা (গাণিতিক সমস্যার সমাধান) পূরণ করুন এবং পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন।

ধাপ-4: পেমেন্ট পরিশোধ

অনলাইনে আবেদন করার জন্য দুটি অর্থপ্রদানের অপশন রয়েছে - ekpay এবং upay। আপনার পছন্দের মোড নির্বাচন করার পরে আপনাকে সে অপশনের পেমেন্ট মডিউলে নিয়ে যাবে। সেখানে পেমেন্ট OTP কোড প্রদান করে মোট 90 টাকা ফি দিয়ে আবেদনপত্র জমা দিন।

এইভাবে, আপনি আবেদন করার পর 10 কার্যদিবসের মধ্যে স্থানীয় ডাক ঠিকানা থেকে আপনার জমির মালিকানার খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পারেন।

আরো জানুন:  আর এস খতিয়ান চেক ও ডাউনলোড করার নিয়ম

জমির খতিয়ানে কি উল্লেখ আছে?

জমির খতিয়ান ও মালিকানার তথ্য সহ উল্লেখিত সকল বিষয় হল-
  • জমি দখলকারীর নাম, ঠিকানা, পিতার নাম, ঠিকানা এবং দখলকারী কোন শ্রেণীভুক্ত।
  • মালিকানা অনুযায়ী জমির অবস্থান, সীমা এবং সীমানা।
  • খতিয়ান তৈরির সময় নির্ধারিত খাজনার পরিমাণ।
  • যে পদ্ধতিতে কর নির্ধারণ করা হয় তার বিবরণ।
  • ইজারা দেওয়া জমির ক্ষেত্রে মালিকের অধিকার।
  • প্রজাস্বত্বের শর্তাবলী।
জমি রেজিস্ট্রিতে এসব বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

আরো জানুন:

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

কিভাবে আরএস খতিয়ান বের করবো?
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.eporcha.gov.bd-এর এই লিংকে গিয়ে এবং বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং মৌজা অনুসারে খতিয়ানের ধরনে 'আর এস' নির্বাচন করে এবং খতিয়ান নম্বর/দাগ নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করে আরএস খতিয়ান পাওয়া যাবে।

একটি খতিয়ান বের করতে কত টাকা প্রয়োজন?
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ/সেটেলমেন্ট অফিস থেকে খতিয়ান পেতে 100 টাকা ফি নেওয়া হয়।
অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে ৫০ টাকা ফি দিতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে, এটি 10 কার্যদিবস পর্যন্ত সময় নিতে পারে।

কে জমির প্রকৃত মালিক?
জমির প্রকৃত মালিকানার তথ্য এবং জমির দখলদারের তথ্য জমির খতিয়ানে দেওয়া আছে। তাই জমির খতিয়ানে বের করে জমির প্রকৃত মালিক জানা যায়। জমির মালিকানা জানার উপায় অনুযায়ী অনলাইনে খতিয়ানও দেখতে পারবেন।

উপরে উল্লেখিত পোস্টের মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করার উপায় ও খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছি। জমির মালিকানা বিষয়ে এবং খতিয়ান বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে আমাদের জানাতে পারেন আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url