ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা ও ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত
আজকে ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা ও ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত ফোরাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার একটি নদী যার নাম ফুরাত। ফুরাত নদী ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এই নদীর উৎপত্তি তুরস্ক থেকে। তুরস্কে উৎপত্তি হলেও, এই নদীটি মূলত সিরিয়া ও ইরাকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে টাইগ্রিস নদীতে মিলিত হওয়ার আগে।
ইতিহাস অনুসারে, প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতাগুলি এই ফুরাত এবং দোজলার জলকে আধুনিক সভ্যতায় বিকশিত করতে ব্যবহার করেছিল। মেসোপটেমিয়া শব্দটি একটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ যার অর্থ দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমি। চলুন জেনে নেয়া যাক ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা ও ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত :
মুসলিম শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী, যতক্ষন না ‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না ততক্ষন ফুরাত নদীতে একটি স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাবে না। এই স্বর্নের পাহাড় আবিস্কার হওয়ার পরে কেয়ামত ঘটবে। মানুষ তা নিয়ে কঠিন যুদ্ধে জড়াবে এবং প্রত্যেক দলের শতকরা ৯৯ জন মারা পড়বে। তাদের প্রত্যেকের কামনা থাকবে হায়! বেঁচে যাওয়া মানুষটি যদি আমিই হতাম! (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৭৪৫৪)
এই হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শায়খুল ইসলাম তাকী উসমানী বলেন, 'ফুরাত নদীতে স্বর্ণের পাহাড় অবতীর্ণ হবে'- এর দুটি অর্থ হতে পারে। এক নদীর জায়গায় একটি পাহাড় উঠবে, যার ভেতর স্বর্ণের খনি থাকবে।
দুই. নদীতে সোনার খনি থাকবে। কিন্তু পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করার উদ্দেশ্য হলো সোনার পরিমাণ অনেক বেশি হবে। (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ২২৮)
ইসলাম ধর্মের অনেক অনুসারী বিশ্বাস করেন যে এই বছরের মধ্যে, অর্থাৎ 2023 সালে, সোনার এই পাহাড়টি সিরিয়ার দেইর-ইজ-জুর প্রদেশের কিরকিসিয়ার ঐতিহাসিক এলাকার কাছে ভেসে উঠবে। এক শতাব্দী আগে, 2019 সালে, সিরিয়ার দেইর আল-জোর প্রদেশের সরকার হালাবিয়া বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে যাতে এই অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে কৃষি জমি এবং শহরগুলিতে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, যা 2012 সালে সম্পন্ন হয়েছিল। ফলস্বরূপ , দেইর আল-জোর প্রদেশে পানির ঘাটতি রয়েছে। তাই হাদিসের বর্ণনা বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলে যায় এমন নানা গল্প ও গুজব তৈরি করছে মুসলমানরা। কিন্তু এখন 2023 সাল প্রায় অর্ধেক চলে গেছে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, তা হলো সোনার পাহাড় কি ভেসে উঠবে? তাহলে কি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর কথা মিথ্যা হবে?
ইতিহাস অনুসারে, প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতাগুলি এই ফুরাত এবং দোজলার জলকে আধুনিক সভ্যতায় বিকশিত করতে ব্যবহার করেছিল। মেসোপটেমিয়া শব্দটি একটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ যার অর্থ দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমি। চলুন জেনে নেয়া যাক ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা ও ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত :
ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা ও ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত
ফুরাত নদী তুরস্ক থেকে সিরিয়া হয়ে প্রবাহিত হয়ে ইরাকে শেষ হয়েছে। এই নদীর দৈর্ঘ্য 2700 কিলোমিটার। ফুরাত নদী তুরস্কের মুরাত নদী এবং খারাসু নদীর সঙ্গম দ্বারা গঠিত। এই নদীটি 90% পানির উৎস। তুরস্কের আবু কামাল, ইরাকের আল কাইয়িম, হাদিথা, রামাদি, ফালুজা, নাজাফ, নাসিরিয়া, কুফা, বিরেচিক, সিরিয়ার রাক্কা প্রদেশ, দেইর আয জুর, মাদাইন, শহরগুলো মূলত এই ফুরাত নদীর ওপর নির্ভরশীল। ফুরাত নদী এই সমস্ত শহরের জলের চাহিদা মেটায়। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন, বিভিন্ন সময়ে তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের কারণে ১৯৯৯ সালের পর থেকে ফুরাত নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে কমতে শুরু করেছে। ফুরাত নদীর পানি খুব দ্রুত কমছে, এ তথ্য জানা গেছে। গ্লোবাল ওয়াটার ফোরামের গবেষণা। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে এই নদী।ফুরাত নদী থেকে সোনার খনি বের হবে
ধর্মীয় রাজনীতির কারণে ফুরাত যেমন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে, তেমনি ধর্মীয় কারণে ফোরাতের নাম সারা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। মুসলমানরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, ইসলামের হাদিসে বলা হয়েছে, ফুরাত নদীর পানি শুকিয়ে সোনার পাহাড় প্রকাশ পাবে। আসলে কি তাই? ফোরাতের তীরে স্বর্ণের পাহাড় আবিস্কারের হাদীস সম্পর্কে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেন। বেশিরভাগ মানুষের কাছে, এটি আসলে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর এখন অনলাইনে কয়েকজন বিখ্যাত ইসলামিক গবেষক বলতে শুরু করেছেন, ইতিমধ্যেই স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পেয়েছে? তারা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এসব বিভ্রান্তি ও মিথ্যা কথা বলছে। যাদের মধ্যে শেখ ইমরান নজর, মুফতি ইব্রাহিম, মিজানুর রহমান আজহারী ও তার অনুসারীরা একজন। প্রকৃত সত্য হল, যদিও পৃথিবীর বড় বড় ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের কেউই এ পর্যন্ত এমন অদ্ভুত ব্যাখ্যা দেননি। তারা এই ফালতু কথাকে পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মতে, ফুরাত নদী শুকিয়ে গেলেও সোনার খনির কোনো সম্ভাবনা নেই। নবী মোহাম্মদের ভবিষ্যত বাণী মিথ্যা? আসুন জেনে নেওয়া যাক হাদিসে ফুরাত নদী সম্পর্কে নবী মোহাম্মদ (সাঃ) কি বলেছেন।গুগল নিউজে ANYUPAY সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
ফুরাত নদী সম্পর্কে হাদিস
ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ফোরাত নদী সম্পর্কে একটি আজব ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। একটি হাদিসে রাসুল মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন, অচিরেই (একটা সময় এমন আসবে) ফুরাত নদীতে স্বর্ণের খনি উম্মোচিত হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি সে সময় বেঁচে থাকবে সে যেন তার থেকে কোনো অংশ গ্রহণ না করে। (বুখারি হাদিস : ৭১১৯)মুসলিম শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী, যতক্ষন না ‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না ততক্ষন ফুরাত নদীতে একটি স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাবে না। এই স্বর্নের পাহাড় আবিস্কার হওয়ার পরে কেয়ামত ঘটবে। মানুষ তা নিয়ে কঠিন যুদ্ধে জড়াবে এবং প্রত্যেক দলের শতকরা ৯৯ জন মারা পড়বে। তাদের প্রত্যেকের কামনা থাকবে হায়! বেঁচে যাওয়া মানুষটি যদি আমিই হতাম! (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৭৪৫৪)
এই হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শায়খুল ইসলাম তাকী উসমানী বলেন, 'ফুরাত নদীতে স্বর্ণের পাহাড় অবতীর্ণ হবে'- এর দুটি অর্থ হতে পারে। এক নদীর জায়গায় একটি পাহাড় উঠবে, যার ভেতর স্বর্ণের খনি থাকবে।
দুই. নদীতে সোনার খনি থাকবে। কিন্তু পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করার উদ্দেশ্য হলো সোনার পরিমাণ অনেক বেশি হবে। (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ২২৮)
ফুরাত নদীর স্বর্ণের পাহাড় কোথায় ভেসে ওঠবে
এছাড়া জানুন: মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থ সহ
ফুরাত নদীর স্বর্নের পাহাড় নিয়ে যুদ্ধ
নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিজের মুখেই বললেন এই সোনার পাহাড় নিয়ে কি বিশাল যুদ্ধ হবে? কিন্তু কার সঙ্গে লড়বে? আসুন অন্য একটি হাদিস দিয়ে জেনে নেওয়া যাক, হজরত উবাই বিন কাব (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, “অচিরেই ফুরাত-নদীতে স্বর্ণের ভান্ডার প্রকাশ পাবে, শুনা মাত্রই সবাই সেখানে চলে যাবে। স্হানীয় লোকেরা বলবে, ব্যবস্থা না নিলে সবটুকু স্বর্ণ-ই মানুষ দখল করে নিয়ে যাবে। ফলে তারাও সেখানে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। ৯৯% যুদ্ধা-ই সেখানে নিহত হয়ে যাবে।”(সহীহ মুসলিম : ৭৪৫৮)।
অর্থাৎ, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, তুরস্ক এবং আমেরিকান জোট ফোরাত নদীর তীরে গোল্ডেন মাউন্টেন দখল করতে দেইর আজ-জুরের কাছে কিরকিসিয়ায় আসবে, তারপর প্রথম সুফিয়ানী এবং তাদের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হবে। এই যুদ্ধে ১ লাখ বা ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ নিহত হবে। কিন্তু কেউ তা দখল করতে পারবে না।
দক্ষিণ সিরিয়ার বনু কালব গোত্রের প্রথম সুফিয়ানী ওয়াদিউল ইয়াবেস (দারা শহর থেকে) উঠবে, সে সিরিয়া থেকে কালো পতাকা আসাব গোত্র ((Islamic state) এবং হলুদ পতাকা বর্বর আবকা গোত্রকে (Tuareg Militant) পরাজিত করবে এবং হত্যা করবে। অতঃপর তুরস্ক ও আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার শিয়া নুসাইরি ও আলাবি সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক হামলা হবে এবং একই সাথে ইরাক ও সিরিয়ায় আবার কালো পতাকা নিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্রের ব্যাপক উত্থান ঘটবে। খোরাসানের কালো পতাকাবাহী গোষ্ঠী ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর উত্থানের 6 বছর পর মক্কা নগরীতে ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন ঘটবে।
ফুরাত নদীর তীরে কাফেরদের মহাযুদ্ধ বা সোনার খনি আবিষ্কার, এই সব আজগুবি কথা বাদ দেওয়া যাক। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এ নদীর পানি শুকিয়ে গেলে তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের অনেক শহরে পানির বড় সংকট দেখা দেবে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।
ফুরাত নদী সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।
ফুরাত নদীর তীরে কাফেরদের মহাযুদ্ধ বা সোনার খনি আবিষ্কার, এই সব আজগুবি কথা বাদ দেওয়া যাক। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এ নদীর পানি শুকিয়ে গেলে তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের অনেক শহরে পানির বড় সংকট দেখা দেবে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।
শেষ কথা
আমি আশা করি আপনি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত এবং ফুরাত নদীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছেন। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা চোখে দেখবেন।ফুরাত নদী সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।
ANYUPAY এর সাথে যুক্ত থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। Islamic বিষয়ে এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।