অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২-২০২৩ করবর্ষ | - anyupay.com

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২-২০২৩ করবর্ষ |

করদাতাদের জন্য সুখবর, আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে আয়কর আয়কর রিটার্ন বা ই-রিটার্ন (২০২২-২৩ করবর্ষ) e-Returnদাখিল করতে পারেন এবং তাত্ক্ষণিকভাবে ট্যাক্স সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারেন। 

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২-২০২৩ করবর্ষ | ই রিটার্ন-e-return

যদি না পারেন তাহলে  ট্যাক্স সার্কেল অফিসে না গিয়ে কিভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয় তা নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। যাদের টিন সার্টিফিকেট(TIN Certificate) রয়েছে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। রিটার্ন দাখিল না করা, আইন অনুযায়ী শাস্তি ও জরিমানা বিধান রাখা হয়েছে।

করযোগ্য আয় না থাকলেও প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করাকে অনেকে অতিরিক্ত ঝামেলা মনে করেন। এর কারণ হিসেবে ট্যাক্স সার্কেলে হয়রানি ও ঝামেলা পোহাতে হয়। সুতরাং, ই-রিটার্ন অবশ্যই করদাতাদের জন্য একটি স্বস্তি।আয়কর রিটার্ন দেয়া আর কোন ঝামেলা নয়। দেখুন ঘরে বসে নিজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি:

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় (২০২২-২০২৩ করবর্ষ)

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় নভেম্বর মাস। আগের আর্থিক বছরের (জুলাই 2021 - জুন 2022) জন্য আপনার করযোগ্য আয়ের কর নির্ধারণ এবং নভেম্বর 2022 এর মধ্যে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করা। অর্থাৎ, এই ক্ষেত্রে আপনার আয়বর্ষ 2021-2022 এবং করবর্ষ 2022-2023।

তবে, যারা প্রথমবার আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন, তারা 30 জুন 2023 পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। তবে করদাতাদের সুবিধার্থে মাঝে মাঝে রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়। আইনি ঝামেলা এড়াতে সর্বদা আপনার আয়কর রিটার্ন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিন। 2022 রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় 30 নভেম্বর থেকে 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ই রিটার্ন (e-Return) সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য, আপনাকে সাইন আপ বা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে আপনার টিআইএন এবং আপনার নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল নম্বর দিয়ে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করতে হবে।

ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

  1. ধাপ 1: প্রথমে রেজিস্ট্রেশনের জন্য এই লিঙ্কে যান - E-Return Registration
  2. প্রথম বক্সে আপনার TIN- টিনসার্টিফিকেট নম্বর লিখুন। তারপরে আপনার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা আছে এমন মোবাইল নম্বরটি লিখুন (প্রথম শূন্য বাদে)। তারপর ক্যাপচা কোডটি সঠিকভাবে প্রবেশ করান এবং অবশেষে ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করুন।
  3. ধাপ 2: এই ধাপে মোবাইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। Verify বাটনে ক্লিক করার পর, আপনার মোবাইলে একটি 6 সংখ্যার OTP কোড পাঠানো হবে। এখানে 6 সংখ্যার OTP কোড লিখুন এবং ভবিষ্যতে ই-রিটার্ন সিস্টেমে লগ ইন করার জন্য মনে রাখার মত একটি একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন।
  4. ইংরেজিতে Capital Letter + Small Letter + Number + Mark ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। লাইক- Rangpur123#
তারপর Submit বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করুন। আশা করি আপনি সফলভাবে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করেছেন। এখন আপনি সিস্টেমে Sign In করে ই-রিটার্ন (e-Return) জমা দিতে পারেন।

আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২-২০২৩

বাংলাদেশের প্রত্যেক করদাতাকে প্রতি বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তবে যারা প্রথমবার রিটার্ন দাখিল করবেন তারা জরিমানা ছাড়াই আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করা যাবে। আয়কর রিটার্ন দাখিল করার আগে আয়কর নির্দেশিকা 2021-2022 পড়া উচিত।

আয়কর রিটার্ন দাখিল করার পদ্ধতি ধাপে ধাপে নিচে দেখানো হয়েছে। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য ভালভাবে বুঝে শুনে এবং সঠিক তথ্য দিয়ে নীচের ধাপগুলি সম্পূর্ণ করুন।

রিটার্ন দাখিলের পূর্বে অবশ্যই যা করবেন

  • আয়কর রিটার্ন দাখিল করার আগে আয়কর নির্দেশিকা 2021-2022 পড়ুন।
  • আপনি যদি গত বছর রিটার্ন দাখিল করেন তবে তার কপি আপনার কাছে রাখুন।
  • আপনার আয় বিবরণী / বেতন বিবরণী / লাভ এবং ক্ষতি বিবরণ / ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক ব্যয় হিসাব রাখুন।
  • ট্যাক্স রেয়াত পেতে আপনার বিনিয়োগ তথ্য লিখুন।
  • কোনো বিষয়ে অবগত না হলে অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিন।

ধাপ ১ঃ ই রিটার্ন সিস্টেমে সাইন ইন

NBR ই-রিটার্ন সিস্টেম (e-Return System) ভিজিট করে দেখুন এবং 2 নং অপশন e-Return ক্লিক করুন।

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২২-২০২৩ করবর্ষ | ই রিটার্ন-e-return-signin-form

ডান দিক থেকে, আপনার টিআইএন নম্বর, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা লিখুন এবং সাইন ইন করতে Sign in বোতামে ক্লিক করুন।
সাইন ইন করার পর নিচের মত একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন। এখানে বাম দিক থেকে Return Submission অপশনে ক্লিক করুন।

e-return-submit-form

ধাপ ২ঃ কর নির্ধারন তথ্য- Tax Assessment Information

ই-রিটার্ন ফর্মের শুরুতে, আপনাকে ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট ইনফরমেশন বা আয়কর সম্পর্কিত তথ্য দিতে হবে অর্থাৎ আয়ের বছর ও উৎস সম্পর্কিত তথ্য।

income-tax-return-fillup-eReturn-Submission

রিটার্ন ফর্মের শুরুতে আমাদের Assessment Information এবং Heads of Income  দিতে হবে। আমি এখানে প্রতিটি অপশন ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।

Return Scheme : Universal Self

এটি হচ্ছে, আয়কর নির্ধারণের একটি পদ্ধতি- যাকে বাংলায় সার্বজনীন সর্বজনীন স্ব-মূল্যায়ন পদ্ধতি বলা হয়।

Assessment Year: 2022-2023

যে অর্থবছরে আমরা আয়কর রিটার্ন দাখিল করব. এটি সেই অর্থবছর। আমরা সাধারণত পূর্ববর্তী অর্থবছরের ( ১ জুলাই ২০২১ থেকে ৩০ জুন ২০২২) রিটার্ন ৩০ নভেম্বর ২০২২ এর মধ্যে দাখিল করে থাকি। তাই Assessment Year ২০২২-২০২৩ হবে।

Income Year: 2021-2022

যেহেতু গত বছরের আয়কর রিটার্ণ সাবমিট করা হবে। এখানে আয়ের বছর হবে – ২০২১-২০২২।

Any Taxable Income in the above mentioned income year

যদি ২০২১-২২ আয় বছরে আপনি করযোগ্য কোন আয় করে থাকেন, Yes দিবেন।
এখানে অনেকেই ভাবতে পারেন যে আমার আয় ৩ লাখ টাকার কম, তাই আমার করযোগ্য আয় নেই। এটা ভুল।

মনে রাখবেন, আপনি যত কম আয় করুন না কেন আপনার আয় করযোগ্য হতে পারে। তবে করযোগ্য আয় পুরুষের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং নারীর জন্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার কম হলে আয়কর প্রযোজ্য হবে না।
সুতরাং, আপনার আয় থাকলে, আপনি করযোগ্য আয়(Taxable Income) অপশনে Yes দেবেন।

Any Income which is fully exempted from tax

বাংলাদেশ সরকার কিছু আয়কে সম্পূর্ণ করমুক্ত করেছে। আপনি এই সেক্টরগুলি থেকে যতই আয় করুন না কেন আপনাকে কোনো আয়কর দিতে হবে না।
যেমন, ফ্রিল্যান্সিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সফটওয়্যার ও আইটি ব্যবসাসহ আরও অনেক সেক্টর। আপনার যদি এই ধরণের সেক্টর থেকে আয় থাকে তবে এই অপশনে Yes সিলেক্ট করুন।

Resident Status: Resident

বাংলাদেশ বাসিন্দা হিসেবে আপনি অবশ্যই Resident অপশনটি সিলেক্ট করবেন।

Heads of Income

এগুলো হলো আয়ের খাত বা উৎস। এখান থেকে শুধুমাত্র আপনার উৎস নির্বাচন করুন।
  1. Salaries - যদি কর্মচারীদের বেতন থেকে আয় থাকে
  2. Interest on Securities - যদি সঞ্চয়পত্র, বন্ড ইত্যাদির সুদ থেকে আয় থাকে।
  3. Income from House Property - গৃহ সম্পত্তি, বাড়ি ভাড়া ইত্যাদি থেকে আয়
  4. Agricultural Income – কৃষি আয়
  5. Income from Business and Profession - ব্যবসা বা পেশা থেকে আয়
  6. Capital Gain - সম্পত্তি বিক্রি করে অর্জিত লাভ
  7. Income from Other Source - উপরোক্ত উৎস ছাড়া অন্য কোনো খাত থেকে আয়
এই ধাপে আপনার আয়ের বিভিন্ন উৎস নির্বাচন করুন। আপনার আয়ের একমাত্র উৎস যদি বেতন হয়, বেতন নির্বাচন করুন। যদি প্রথম 6টি উৎস এর মধ্যে কোনটিও না থাকে তবে অন্য উৎস থেকে 7 নং আয় নির্বাচন করুন।

Any Income from the Following Sources

এছাড়াও, নিম্নলিখিত যেকোন উৎস থেকে আপনার আয় নির্বাচন করুন। দ্রষ্টব্য, আপনার যদি রেমিটেন্স আয় থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই এই বিকল্পটি নির্বাচন করতে হবে (বাংলাদেশের বাইরে আয় করা আয়)।
  1. ফার্মের অংশীদার হিসাবে - As a Partner of Firm
  2. AoP এর সদস্য হিসাবে - As a Member of an AoP
  3. আয় বাংলাদেশের বাইরে - Income Earned Outside Bangladesh
  4. স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের দ্বারা অর্জিত আয় - Income Earned by the Spouse or Minor Children
এরপর Save and Continue বাটনে ক্লিক করে Next step এ যান।

ধাপ ৩ঃ আয়ের তথ্য – Income Information

এ ধাপে আপনি যেসব উৎস থেকে আয় করেছেন তার তথ্য দিতে হবে। নিচের ছবিটা ভালোভাবে লক্ষ্য করুন।

eReturn-Submission

এখানে প্রতিটি বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো :

Additional Information

Location of Main Source of Income- প্রধান আয়ের উৎসের এলাকা এখানে আপনি যে এলাকায় আয় করছেন বা বসবাস করছেন তা দিবেন।
  • City Corporation Area- যদি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাস করেন
  • Any Other Area- গ্রাম বা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বসবাস করেন

গুগল নিউজে ANYUPAY সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন


War wounded Gazetted Freedom Fighter- যদি আপনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হন তাহলে টিক দিন।

Person with Disability- যদি আপনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হন টিক দিন।

Claim Benefit as a Parent/ Legal Guardian of a Person with Disability- যদি আপনি কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা শিশুর পিতা-মাতা বা আইনত অভিভাবক হয়ে থাকেন এখানে টিক দিন।

Claim Tax Rebate for Investment

বাংলাদেশ সরকার কিছু বিশেষ ধরনের বিনিয়োগে কর ছাড় (Tax Rebate) দেয়। আপনার যদি ডিপিএস, সেভিংস পেপার বা অন্য কোনো অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ থাকে, তাহলে কর ছাড় পেতে এই অপশনে YES নির্বাচন করুন।

Shareholder Director of a Company

যদি কোন প্রাইভেট বা পাবলিক লিঃ কোম্পানীর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হয়ে থাকেন।

IT10B Requirement

IT10B ফর্ম আয়কর রিটার্ন দাখিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি একজন স্বতন্ত্র করদাতার মোট সম্পদ 40 লাখ টাকা বা তার বেশি থাকে, তাহলে এই ফর্মে তার সম্পদ-দায় এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব দেখানো বাধ্যতামূলক। মোট সম্পদ 40 লক্ষ টাকার কম হলে তা পূরণ করা বাধ্যতামূলক নয়।

তবে আপনি যদি আপনার রিটার্নটি আরও পরিষ্কার করতে চান তবে আপনি এটি পূরণ করতে পারেন। এছাড়াও, বেশিরভাগ আয়কর অফিস সম্পদ-দায় এবং ব্যয় বিবরণী ছাড়া রিটার্ন গ্রহণ করতে চায় না। তাই এটি পূরণ করা ভাল।

Gross Wealth over 40,00,000? Own a Motor Car? Have House Property in any City Corporation? যদি তারা এগুলো বিদ্যমান থাকে তবে Yes দিন এবং যদি না থাকে তবে No সিলেক্ট করুন।

IT10B is not Mandatory. Still want to Submit?-

IT10B হচ্ছে সম্পদ-দায় বিবরণী দেখানোর একটি ফর্ম। যদি আপনার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০ লক্ষ টাকার কম হয়ে থাকে, এই বিবরণী দাখিল করা বাধ্যতামূলক নয়।

তারপরও আপনি যদি পূরণ করেন এটি সাবমিট করতে চান, Yes দিন এবং Save & Continue বাটনে ক্লিক করে Next Step এ যান।

ধাপ ৪: আয়ের বিস্তারিত তথ্য – Income Details

আয়ের উৎস অনুযায়ী সঠিকভাবে তথ্য পূরণ করুন। এখানে বার্ষিক আয় পূরণ করতে মনে রাখবেন।

যদি অন্য উৎস থেকে আয় তার অন্য উৎসের ক্যাটাগরিতে পাওয়া না যায়, তাহলে List থেকে Any Other Income নির্বাচন করুন। নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে।

eReturn-submission-income-details

Tax Exempted Income – কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়/ করমুক্ত আয়

ফ্রিল্যান্সিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সফটওয়্যার এবং আইটি ব্যবসা এবং এই ধরনের বিভিন্ন উৎস থেকে আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত। তাই এসব খাত থেকে আয় থাকলে তা এখানে নির্বাচন করতে হবে। করমুক্ত আয় (Tax Exempted Income)  অপশনটি নীচের ছবিতে দেখানো হয়েছে।

eReturn-submission-income-details

Income Summery

তারপর আপনার বার্ষিক আয় এবং ব্যবসায়িক খরচ Income Summery তে দেখাতে হবে।

ধরা যাক আপনি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে 2 লাখ টাকা (বার্ষিক) আয় করেন। কন্টেন্ট তৈরি করতে আপনার খরচ ৫০ হাজার টাকা, ডিজাইনারের বেতন ১৫ হাজার টাকা, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ বিল ১৫০০ টাকা।
এক্ষেত্রে আপনার মোট মুনাফা বা মোট আয় হবে ২ লাখ টাকা। General, Administrative and Other Expense বাবদ (50,000 + 15000 + 1500) = 66,500 টাকা, নেট আয় হবে 1,33,500 টাকা।

eReturn-submission-income-summery

Income Summery পূরণ করে Save and Continue বাটনে ক্লিক করে পরের Step এ যান।

ধাপ ৫: ব্যয়ের তথ্য – Expenditure

এই ধাপে ব্যয়ের তথ্য দিতে হবে। যদি আপনার মোট সম্পত্তি 40 লক্ষ টাকা বা তার বেশি হয়, তাহলে ব্যয়ের তথ্য অবশ্যই স্টেটমেন্ট আকারে পূরণ করতে হবে। এর জন্য IT10B ফর্ম পূরণ করতে হবে। ফর্মটি পূরণ করতে Yes ক্লিক করুন।

যদি আপনার মোট সম্পত্তি 40 লাখ টাকার কম হয়, তাহলে আপনাকে এটি পূরণ করতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার বার্ষিক পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত খরচের মোট পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে।
income-tax-return-it10bb-form-e-return

খরচের তথ্য পূরণ করুন, পরবর্তী ধাপে যেতে Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৬: সম্পদ ও দায় বিবরণী পূরণ

আপনি যদি একজন নতুন করদাতা হন, তাহলে সম্পদের ঘরে আপনার সমস্ত সম্পদের বিবরণ এবং ধরণ অনুযায়ী লিখুন। সমস্ত বিবরণ সঠিকভাবে পূরণ করুন যেমন সেভিংস কার্ডের পরিমাণ, অন্য যেকোন ডিপিএস, নগদ এবং ব্যাংক আমানত, আসবাবপত্র এবং ইলেকট্রনিক্স, সোনার অলঙ্কার। কোনো তথ্য গোপন না করাই ভালো। নিচের ছবিটি দেখুন।

savings-account-tax-return
savings-account-tax-return-summery


কিভাবে সম্পদ ও দায় বিবরণী মিলকরণ করবেন

নতুন করদাতা

নতুন রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে নিচের নিয়মে সম্পদ ও দায় বিবরণী প্রস্তুত করবেন।

নীট সম্পদের পরিমাণ (মোট সম্পদদায় ঋণ)

XXX

(+) আয়বর্ষে আপনার মোট ব্যয় (জীবনযাপন, লোকসান, দান অন্যান্য সকল)

XXX

(-) আয়বর্ষে আপনার মোট আয় (করযোগ্য কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত সকল আয়)

XXX

(=) গত আয়বর্ষের শেষে সঞ্চিত অর্থ (অন্যান্য প্রাপ্তি হিসেবে দেখাবেন )

XXX

পুরাতন করদাতা

যদি আপনি গত বছর রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। সেক্ষেত্রে গত বছরে প্রদর্শিত নিট সম্পদ নতুন রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে নিচের নিয়মে সম্পদ ও দায় বিবরণী প্রস্তুত করবেন।

আপনার উল্লেখ করা সকল সম্পদের পরিমাণ
গত আয়বর্ষের নীট সম্পদ (পূর্ববর্তী বছরের রিটার্নে যত টাকা সম্পদ দেখানো হয়েছে)XXX
(+) আয়বর্ষে আপনার মোট আয় (করযোগ্য ও কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত সকল আয়)

XXX

(-) নীট সম্পদের পরিমাণ (মোট সম্পদ – দায় ও ঋণ)

XXX

(=) আপনার মোট ব্যয় (জীবনযাপন, লোকসান, দান ও অন্যান্য সকল)

XXX

উপরের ছবিতে সম্পদ ও দায় বিবরণীর সামারির দেখুন। Difference শুন্য হলে Save & Continue করে পরের ধাপে যান।

ধাপ ৭: আয়কর ও পরিশোধ – Tax and Payment

আপনি যদি কোন উৎস কর এবং অগ্রিম কর (Source Tax and Advance Tax) পরিশোধ করে থাকেন তবে আপনি এখানে দেখাতে পারেন। উৎস কর এবং অগ্রিম কর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার প্রদেয় মোট কর থেকে কেটে নেওয়া হবে।

savings-account-tax-return-summery
income-tax-payment-e-return

যদি আপনার আয়ের উপর কোনো ট্যাক্স প্রদেয় না হয়, তাহলে প্রদেয় পরিমাণ শূন্য হবে। যাদের রিটার্নে Payable Tax Amount শুন্য বা Zero হয়, তাদের রিটার্নকে জিরো রিটার্ণ (Zero Return) বা শুন্য রিটার্ন বলে।

এই পর্যায়ে আপনার আয়কর রিটার্ন সম্পন্ন হয়েছে। এখন আপনি অনলাইনে আপনার রিটার্ন দাখিল  করতে পারেন বা রিটার্ন ফর্মের একটি প্রিন্ট কপি নিয়ে সরাসরি আয়কর সার্কেলে জমা দিতে পারেন।

অফলাইন রিটার্ন (Offline Return)

বাম পাশে Yellow কালারের বাটন-Proceed to offline (Paper) Retur বোতামে ক্লিক করে আয়কর রিটার্ন ফর্মের প্রিন্ট কপি নিন। তারপর ফর্মটি আপনার সংশ্লিষ্ট আয়কর সার্কেল অফিসে জমা দিন। এর জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। আপনি Proceed to Online Return ক্লিক করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারেন।

অনলাইন রিটার্ন (Online Return)

আপনি ডান পাশের নীল বোতামে - Proceed to Online Return ক্লিক করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারেন।

e-return-submit-form

উপরের ছবিতে দেখানো হিসাবে আপনি রিটার্ন ফর্মের একটি প্রিভিউ দেখতে পারেন। আপনার সম্মতি দেওয়ার জন্য ফর্মের নীচে আপনাকে Verification and Signature অপশনে Yes দিতে হবে।

e-return-submit-form

লাল বক্সে চিহ্নিত টিক বক্সে টিক দিন এবং নীচে Submit Return বোতামে ক্লিক করুন

file-income-tax-e-return



সতর্কতা: অবশেষে এখানে রিটার্ন দাখিল করার জন্য আপনার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। মনে রাখবেন, Yes বাটনে ক্লিক করার পর আপনার রিটার্ন জমা হয়ে যাবে। এর পরে আপনি কোন পরিবর্তন করতে পারবেন না। তাই তথ্যে কোনো ভুল আছে কিনা সন্দেহ থাকলে, আপনি No বাটনে ক্লিক করে ফর্মটি আবার চেক করতে পারেন।

Yes বোতামে ক্লিক করার আগে, আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবেন যে আপনার রিটার্ন ফর্মের সমস্ত তথ্য সঠিক। সবকিছু ঠিক থাকলে Yes বাটনে ক্লিক করে রিটার্ন জমা দিন।

ধাপ ৮: Download Acknowledgement Receipt

আয়কর রিটার্ন সফলভাবে জমা দেওয়া হলে, আপনি নীচের ছবির মত একটি message দেখতে পাবেন। এখানে আপনি রিটার্ন সাবমিশনের একটি Reference ID এবং Acknowledgement Receip ডাউনলোড করার Option দেখতে পাবেন।

file-income-tax-e-return

আশা করি আপনিও সফলভাবে অনলাইনে আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন যাচাই

আপনি যদি আয়কর পেশাদার বা আইনজীবীর মতো অন্য কারো মাধ্যমে আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন তবে আপনি এখন আপনার রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পারেন।

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন যাচাই করতে ভিজিট করুন- আয়কর রিটার্ন যাচাই। তারপর কর বছর 2022-2023 নির্বাচন করুন।

নীচের বক্সে আপনার টিআইএন নম্বর এবং ক্যাপচা কোড লিখুন। অবশেষে, আপনার রিটার্ন যাচাই করতে Verify বাটনে ক্লিক করুন।

income-tax-return-verification

যদি সময়মতো আয়কর রিটার্ন দাখিল না করা হয়, তাহলে আপনি নেটিশ পেতে এবং জরিমানা পরিশোধের ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই, আপনি নির্ধারিত তারিখের আগে আয়কর রিটার্ন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে নিচের প্রশ্নোত্তরগুলো পড়তে পারেন।

ই রিটার্ন বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর ( FAQ)

মোবাইলের মাধ্যমে ই-রিটার্ন জমা দেয়া যাবে?
না, ই-রিটার্নকে সহজ ও user-friendly করার জন্য অনেক features দেয়া আছে, যার অনেকগুলো মোবাইল ডিভাইসে পাওয়া যাবে না। তাই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে ই-রিটার্ন করুন।

ই রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করতে কি লাগে?
ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করতে টিআইএন এবং আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত মোবাইল ফোন নম্বর লাগে। আপনার মোবাইল ফোন নম্বরটি ভেরিফাইড কি না তা আপনার ফোন থেকে *১৬০০১# নম্বরে ডায়াল করে জেনে নিতে পারেন।

ই রিটার্ন সিস্টেমে সাইন-ইন কিভাবে করবো?
ই-রিটার্ন সিস্টেমে Sign-in করতে হলে TIN Number এবং Password লাগবে। পাসওয়ার্ড পাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনি নিজের পাসওয়ার্ড নিজে ঠিক করে নিবেন। পরবর্তীতে এই পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইন ইন করবেন।

টিআইএন খোলার সময় যে ফোন নম্বর দিয়েছিলাম তা এখন আর নেই। আমি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবো?
পারবেন। আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত (biometrically verified) যে কোনো মোবাইল ফোন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন।

পাসওয়ার্ড সেট করার নিয়ম কি?
পাসওয়ার্ড কমপক্ষে আট character হতে বিশিষ্ট হবে। এর মধ্যে কমপক্ষে একটি করে lower case, upper case, digit (0-9) এবং special character (@, #, %, &, ইত্যাদি) থাকতে হবে। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করলে সিস্টেম আপনাকে নির্দেশ করবে।

ই রিটার্নের ক্ষেত্রে কোন সাপোর্টিং কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে?
অনলাইন রিটার্ন দাখিলে কোনো কাগজপত্র সাবমিট করতে হয় না। আপনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থেকে নির্ভুলভাবে তথ্য এন্ট্রি দিন। অনলাইনে রিটার্ন submit করার সাথে সাথে সিস্টেমে আপনার অ্যাসেসমেন্ট হয়ে যাবে এবং আপনি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পেয়ে যাবেন।

অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করার পর আবার কি সার্কেলে গিয়ে কাগজপত্র দাখিল করতে হবে?
না, হবে না। অনলাইনে রিটার্ন submit করার সাথে সাথেই আপনার অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন হয়ে যাবে।

আমার উৎস কর এবং অগ্রীম কর দেয়া আছে। আমি কি ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবো?
আপনি ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আপনার পেপার রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারেন। আপনার দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ই-রিটার্ন সিস্টেম সঠিকভাবে আপনার রিটার্ন তৈরি করবে, যা আপনি প্রিন্ট করে সার্কেলে জমা দিতে পারবেন। উৎস বা অগ্রিম করের অনলাইন যাচাইকরণের জন্য অন্যান্য সিস্টেমের সাথে সংযোগ (API) প্রয়োজন। এপিআই বাস্তবায়নের কাজ চলছে, যা শেষ হলে উৎসে বা অগ্রিম কর প্রদানকারী করদাতারা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করার সময় কোনো ট্যাক্স দিতে হলে আমি কি অনলাইন পেমেন্ট করতে পারবো?
হ্যাঁ, পারবেন। অনলাইন রিটার্ন সাবমিট করার সময় কোনো ট্যাক্স দিতে হলে ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকেই অনলাইন পেমেন্ট করা যাবে।

কিভাবে আয়কর রিটার্ন জমা হয়েছে কিনা যাচাই করব?
আয়কর রিটার্ন যাচাই করার জন্য ভিজিট করুন verification.taxofficemanagement.gov.bd । এখানে করবর্ষ বাছাই করুন এবং আপনার TIN Number লিখুন। তারপর ক্যাপচা কোড পুরণ করে Verify বাটনে ক্লিক করে আয়কর রিটার্ন ভেরিফিকেশন করতে পারবেন।

আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ২০২২ কখন?
আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় হচ্ছে ৩০ নভেম্বর ২০২২

আয়কর সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url